সময় কথা বলে
দূর মসজিদ থেকে ফজরের আজানের সুর ভেসে আসছে। আজান শুনে রহিম মিয়া ধুর স্মস করে বিছানা থেকে উঠে পড়ল। ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করবে বলে।
রহিম মিয়া পড়ন্ত গ্রামের এক অর্ধ বয়সী লোক। তার সংসারের ৫ ছেলে এবং তিন মেয়ে আছে।
সে এই মধ্যবিত্ত সংসারের ঊর্ধ্বতন কর্তা। পেশা কৃষি হলেও তার ৮-৯ বিঘা ধানী জমি, বড় একটা বাড়ি এবং বাড়ির পাশে বড় একটা পুকুর, তার পাশে ছোট্ট একটা বাঁশের ঝাড় রয়েছে।
বড় ছেলের দুই ছেলে মেয়ে মেয়েটা বড় কিন্তু পড়তে দেয়নি। বাড়িতে কাজ করিয়ে নেয়, আর ছেলেটা ছোট হলেও শিশুবিদ্যালয় (Kindergarten 2) দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়তেছে। এই শিশুবিদ্যালয় (Kindergarten)টি এই গ্রামে নতুন। দুই বছর হয় উদ্বোধন করা হয়েছে কিন্তু গ্রামের অধিকাংশ লোক এখানে বাচ্চা পড়ায় না, কারণ এখানে বাচ্চা পড়াতে গেলে মাসিক কিছু টাকা বিদ্যালয় এর শিক্ষকদের দিতে হয়।
মেজো ছেলের কোন সন্তান নেই চেষ্টা কম করছে না, তবুও তাদের কোন সন্তান হচ্ছে না।
সেজ ছেলে এক মেয়ে তবুও পড়তে দিয়েছে গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
তার ছোটটা সবে মাত্র 6 মাস হল বিয়ে করেছে। বউ নিয়ে খুব আনন্দেই দিন কাটছে।
সব ছোট ছেলেটা মাধ্যমিক পরীক্ষা দিবে আর দুই মাস বাকি আছে চূড়ান্ত পরীক্ষার। (final exam).
সব বড় মেয়েটার বিয়ে হয়েছে শ্বশুর বাড়িতে থাকে। দুই মেয়ে বাচ্চা হওয়ার কারণে তার দিন খুব কষ্টে কাটে। লোকের মুখে শোনা যায় বড় মেয়েটার যদি আবারো আরেকটি মেয়ে সন্তান জন্ম নেয়, তাহলে নাকি তার স্বামী তাকে তালাক দেবে। হায়রে সমাজ! এই গ্রামের প্রায় ২৫ শতাংশ লোক শিক্ষিত তবুও তারা জানে না যে, মেয়ে সন্তান জন্মদানের জন্য মায়ের কোনো ভূমিকা নেই। সব ভূমিকা বাবাদের ওই থাকে।
আর মেজ মেয়েটা সপ্তম শ্রেণিতে পড়তেছে এবং তার ছোট মেয়েটা ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে।
বড় চার ছেলে যার যার মত ভিন্ন হয়ে গুছিয়ে নিয়েছে নিজেদের সংসার । এক ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে রহিম মিয়ার সংসার ভালোই চলে।
তার জীবন থেকে তিনি হাড়ে হাড়ে বুঝতে পেরেছে পড়ালেখার কত গুরুত্ব। তাই সে অশিক্ষিত হলেও তার সব সন্তানদেরই কম বেশি পড়ালেখা করিয়েছে।
Nice history. More update
ReplyDelete